Friday 5 December 2014

মুক্তির প্রহসনঃ কেট চোপিনের "মুহূর্তের গল্প"

মুহূর্তের গল্প
           -  কেট চোপিন

মিসেস ম্যালার্ডের হৃদরোগের কথা জানায়, খুব সতর্কতার সাথে প্রায় আলগোছে তার কাছে তার স্বামীর মৃত্যূর খবর দেওয়া হল।

তার বোন জোসেফিন তাকে বললেন, ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাক্যে, আস্ফূট ইঙ্গিতে, যা প্রকাশ পেল আধো আধো উন্মোচনে। তার স্বামীর বন্ধু রিচার্ডও ছিলেন সেখানে, তার কাছেই। তিনিই সেখানে ছিলেন যখন মৃত তালিকায় মিঃ ম্যালার্ডের নাম সবার উপরে নিয়ে খবরের কাগজের অফিসে খবর পৌছায়। দ্বিতীয় টলিগ্রামে শুধু নিশ্চিত হয়ে যত দ্রুত ও যত্নের সাথে সম্ভব তিনি বন্ধু্র মৃত্যুর খারাপ খবর পৌছালেন।

অনেক মহিলারা যেমটা করেন, মানতে চান না ঘটনার বিহ্বলতার কারনে, তিনি তাদের মত করে খবরটা নিলেন না। অকস্মা তীব্র বেদনায় কেঁদে উঠলেন তার বোনের কোলে। যখন বেদনার ঝড় নিজে থেকেই মিইয়ে গিল তিনি একাকি তার রুমে চলে গেলেন। চাইলেন না কেউ তাকে অনুসরণ করুক।
মুল গল্পঃ Story of an Hour

ঘরে একটা জানালামুখী, আরামী ঘরোয়া আর্ম চেয়ার। তিনি গা এলিয়ে দিলেন একটা নিংড়ানো পরিশ্রান্তি নিয়ে যা তার শরীর ভেঙ্গে দিয়ে এবং আরও গভীরে তার সত্ত্বায় প্রবেশ করতে চাইল।

বাড়ীর সামনের চত্ত্বরে গাছের চূড়া গুলো তিনি দেখতে পারলেন। বসন্তের বাহারী জীবন। বাতাসে বৃষ্টির তাজা নিঃশ্বাসের গন্ধ। নিচের রাস্তায় ফেরিওয়ালার ফেরি করার চিকার। কারও গাইতে থাকা দূরবর্তী কোন গানের অন্তরা তার কানে লাগল আবছাভাবে, আর ঘরের কার্নিশে কিছু চড়ুইয়ের কিচিরমিচির, পশ্চিম জানালামুখে দেখতে পেলেন থরে থরে সাজানো নীলাকাশের টুকরো টুকরো মেঘ।

কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়া শিশুর মত ফোঁপানী ছাড়া তিনি মাথা এলিয়ে পড়ে রইলেন প্রায় নিঃশ্বব্দে।

তিনি তরুনীই ছিলেন, একটা নির্দোষ, শান্ত চেহারা, যার রেখাগুলো প্রমাণ দেয় অবদমনের এবং একটা শক্তির। কিন্তু এখন সেখানে একটা ফাঁকা দৃষ্টি যা স্থির হয়ে আছে ঐ দুরের টুকরো মেঘগুলোর কোন একটায়। এই চাহনি নিজেকে দেখার নয় বরং কিছু সন্দেহময় অন্তর্দষ্টির।

কিছু একটা আগমন ঘটছিল তার ভেতর আর তিনি তার প্রতিক্ষা করছিলেন ভয়ে ভয়ে, এটা কি? তিনি জানতেন না; নাম দেওয়ার জন্য এটা কিছুটা অতীন্দ্রীয় হেয়ালির মত। কিন্তু তিনি টের পেলেন, আকাশের ভেতর থেকে লতিয়ে আসা, চিন্তাস্পর্শী শব্দগুলো, গন্ধগুলো, আর সেই বাতাস ভরানো রংগুলো।
তার বুকের খাঁচা দ্রুত আন্দোলিত হতে শুরু করল। তিনি বুঝতে শুরু করলেন তাকে অবিষ্ট করার জন্য এগিয়ে আসা বিষয়টাকে, আর তিনি তার ইচ্ছা দিয়ে এটাকে ঠেলে পাঠাতে সংগ্রাম করছিলেন তার তন্বী হাতগুলো যেমনটা করত।

যখন তিনি হাল ছাড়লেন তার আধখোলা ঠোটের ফাঁক গলে কিছু একটা অস্ফুট আওয়াজ বেরুলো। তার নিঃশ্বাসের উপর ভর দিয়ে বারবার বললেনঃ মুক্তি, মুক্তি, মুক্তি! ঘোলা চাহনি আর পেছনে আসতে থাকা ভয়ের ছায়া তার চোখ থেকে মুছে গেল। সেগুলো অত্যগ্রু আর আলোকিত হয়ে রইল। তার নাড়ি দ্রুত হল, আর প্রবাহী রক্তধারা তার শরীরের প্রতিটি কোণ উষ্ণ ও শীথিল করে দিল।

তিনি জানতে চাইলে না এটা কোন ভিতীকর আনন্দ কি না। একটা পরিষ্কার আর সমুচ্চ উপলব্ধি তাকে এই উস্কানি অকিঞ্চিতকর মনে করার সাহস জোগাল। তিনি জানতেন তিনি আবার কাদঁবেন; যখন তিনি মৃত্যুতে গুটিয়ে যাওয়া হাতগুলো দেখবেন; সেই স্থির নীরস মৃত চেহারাটা যা কখনই তার দিকে সঞ্চিত ভালবাসা নিয়ে তাকায় নি। কিন্তু তিনি সেই তিক্ত মুহূর্তের ওপারে অনাগত বছরের মিছিল দেখতে পেলেন যা একান্তই তার নিজের হতে চলেছিল। আর তিনি উদ্বাহু হয়ে তাদের স্বাগত জানালেন।

আগামী বছরগুলোতে তার সাথে কেউ থাকবে না; তিনি নিজের জন্য বাঁচবেন। কোন ইচ্ছাঘাতক থাকবে না যার অন্ধ অস্তিত্ত্ব নর-নারীকে বিশ্বাস দেয় যে তারা তাদের ব্যক্তিইচ্ছা পাশের মানুষটির উপর চাপিয়ে দিতে পারে। এই স্বল্প সময়ের ভালোলাগায়, কি জানি ভাল বা নিষ্ঠুর কারনে বিষয়টা তার কাছে অপরাধের মত ঠেকল।

মুক্তি
তারপরও তিনি তাকে ভালবাসতেন কখনও কখনও। প্রায়ই বাসতেন না। কি এসে যায়! জীবনের তীব্র অনুভুতিময় আত্মস্বীকৃতির কাছে অমমাংসিত ধাঁধার মত এই ভালবাসা কিইবা করতে পারে। মুক্তি! দেহ আর আত্মার মুক্তি!, তিনি বিড়বিড়িয়ে চললেন।

জোসেফিন দরজায় মুখ লাগিয়ে ভেতরে ঢোকার জন্য ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। লুসি, দরজা খোল! দোহাই; দরজা খোল অসুস্থ হয়ে পড়বে। কি করছো, লুসি? ঈশ্বরের দোহাই দরজা খোল।
যাও এখান থেকে। আমি অসুস্থ হব না। না; তিনি খোলা জানালা দিয়ে জীবিনের অমৃত পান করছিলেন। তার কল্পনা উদ্দাম ছুটছিল সামনের দিনগুলোর দিকে। বসন্ত, গ্রীষ্ম, আর সব দিন গুলো যা তার শুধু নিজের হবে। তিনি দীর্ঘ জীবনের প্রার্থনা করলেন। এইতো গতকালও তিনি শিহরিত হয়ে দীর্ঘ জীবনের প্রার্থানা করেছিলেন।

বোনের পীড়াপীড়িতে অবশেষে দরজা খুললেন। তার চোখে বিজয়ের উত্তেজনা, তিনি নিজেকে বিজয়ী ঈশ্বরীর মত করে সামনে আনলেন। বোনের কোমর জড়িয়ে ধরে সিড়ি বেয়ে নেমে এলেন। রিচার্ড তাদের জন্য নিচে অপেক্ষায় ছিলেন।

কেউ একজন বাইরে থেকে চাবি দিয়ে দরজা খুলছিল। দরজায় ব্রেন্টলি ম্যালার্ডকে দেখা গেল, ছাতা হাতে, কিছুটা ভ্রমনক্লান্ত। তিনি দুর্ঘটনার স্থান থেকে অনেক দুরে ছিলেন, এমনকি কোন দুর্ঘটনার ব্যাপারে জানতেনই না। তিনি জোসেফিনের আর্ত চিকার আর রিচার্ডের দ্রুত পায়ে মিসেস ম্যালার্ডকে আড়াল করার চেষ্টার সামনে বিহ্বলের মত দাড়িয়ে থাকলেন। কিন্তু রিচার্ড বড্ড দেরী করে ফেলেছিলেন।

ডাক্তাররা যখন আসলেন, তারা বলেছিলেন তার (মিসেস ম্যালার্ড) মৃত্যু হয়েছিল হৃদরোগে সেই আনন্দে যা ঘাতক।

Wednesday 3 December 2014

পাহাড়ের গানঃ পাবলো নেরুদার "মাচু পিচুর চূড়া"

মাচু পিচুর চূড়া
           -পাবলো নেরুদা
(বারো অধ্যায়)
এই ধার গুলোতে চাষাবাদ করা হত

আমার সাথে জন্ম নিতে উঠে এসো, আমার ভাই।

তোমার হতাশার বীজে বেড়ে ওঠা
রাজত্বের গভীর থেকে বাড়িয়ে দাও হাত।
তুমি ফিরবে না এইসব পাথরতল থেকে।
তুমি ফিরবে না অতল গভীর সমেয়ের ওপার থেকে।
ফিরবে না তোমার ঘসা কন্ঠস্বর।
ফিরবে না তোমার কোটর বিস্ফরিত চোখ।

পৃথিবীর গভীর থেকে তাকিয়ে দেখ আমাকে,
কৃষক, তাঁতি, বাকহীন রাখাল,
তদারকি লামার রক্ষক,
বিপদজনক ভারার রাজমিস্ত্রি,
আন্দিজ-অশ্রু মাখা জলের বাহক,
থেতলানো আঙ্গুলের স্বর্ণকার,
ফসলের মাঝে কম্পমান চাষী,
কর্দমাক্ত কুমার,
ফিরিয়ে আনো তোমার প্রাচীন গোর-দেওয়া দুঃখ
এই নতুন জীবনের পেয়ালায়।
আমাকে দেখাও তোমার রক্ত আর তোমার ক্ষত,
আমাকে বলঃ এখানে আমি সাজা পেয়েছি
যখন রত্ন-পাথর পাইনি বা ধরনী
মাচু পিচুর পুরো অংশ
জন্ম দেয়নি বেসুমার ফসলের কিংবা পাথরের;
চিনেয়ে দাও সেই পাথর যেখানে তুমি আঁছড়ে পড়েছ
আর সেই কাঠ যেখানে তোমাকে তারা বিধেছে ক্রুশে।
তোমার আদিম চকমকি পাথর ঘস
জ্বেলে দাও পুরোনো বাতি, ফাটল ধরাও
শতাব্দীপুরনো তোমার শরীরে রক্ত-আঁক দেওয়া চাবুকের দাগে।

আমি তোমার মৃত মুখের ভাষা হতে এসেছি।

জড় হও, সারা পৃথিবীর
সব ক্ষয়ে যাওয়া স্তব্ধ কন্ঠস্বর,
আর কথা কয়ে চলো এই দীর্ঘ রাতে
নোঙ্গর বাধা যেন আমি তোমার সাথে।
আমাকে বলে দাও সব, খুটি থেকে খুটিতে
স্তরে স্তরে, ধাপে ধাপে।
খাপে ভরা খঞ্জর শান দাও,
বিধিয়ে দাও আমার বুকে আর বাহুতে,
হলদে রং-জ্বলা নদীর মতন,
জাগুয়ার-সমাধি নদীর মতন,
আর আমাকে কাঁদতে দাও, ঘন্টাজুড়ে, দিনমান, সারাবছর,
অন্ধ সময় আর নক্ষত্রোপাশ-শতাব্দী ঘিরে।
লামা

আমাকে স্তব্ধতা দাও, জল দাও, আশা দাও।

সংগ্রাম দাও, লৌহ, আগ্নেয়গিরি।

চুম্বকের মত বেধে ধর আমার সাথে তোমার শরীর।

আমার শিরায় আর ওষ্ঠে জড় হও।

কথা বল আমার শব্দে, আমার রক্তে।

মূল কবিতাঃ Heights of Macchu Picchu 
কবিঃ পাবলো নেরুদা, চিলির জাতীয় কবি। ১২ অংশের দীর্ঘ কবিতার ১২তম অংশটিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।

English Translation of "Ami Somvoboto khub Chotto Kisur Jonno"(আমি সম্ভবত খুব ছোট কিছুর জন্য) by Humayun Azad



আমি সম্ভবত খুব ছোট কিছুর জন্য
                                    -হুমায়ুন আজাদ

আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো
ছোট ঘাসফুলের জন্যে
একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো চৈত্রের বাতাসে
উড়ে যাওয়া একটি পাঁপড়ির জন্যে
একফোঁটা বৃষ্টির জন্যে



আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
দোয়েলের শিসের জন্যে
শিশুর গালের একটি টোলের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো কারো চোখের মণিতে
গেঁথে থাকা একবিন্দু অশ্রুর জন্যে
একফোঁটা রৌদ্রের জন্যে


আমি সম্ভবতখুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
এক কণা জ্যোৎস্নার জন্যে
এক টুকরো মেঘের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো টাওয়ারের একুশ তলায়
হারিয়ে যাওয়া একটি প্রজাপতির জন্যে
এক ফোঁটা সবুজের জন্যে


আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো
খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে
খুব ছোট দুঃখের জন্যে
আমি হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে
একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে
একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে




Perhaps I Wiil Die for Tiny Things
-Humayun Azad

Perhaps I will die for a tiny thing
For a tiny grass flower
For a tickling dew drop
Perhaps I will die in the spring wind
For a flying petal
For a droplet of rain

Perhaps I will die for a tiny thing
For the song of a magpie
For the dimple on a baby’s cheek
Perhaps I will die for a drop of tears
For a bit of sunshine
In someone’s pupils

Perhaps I will die for a tiny thing
For a particle of moonlit
For a fragment of cloud
Maybe I will die for a butterfly
For a bit of green
Lost at the ninety-ninth floor of a tower

Perhaps I will die for a tiny thing
For a very little dream
For an unremarkable pathos
Perhaps I will die in someone’s sleep
For a minor sigh
For a jot of beauty.

Tuesday 2 December 2014

English translation of Shamsur Rahman's "Tomake Paoar Jonn He Sadhinota"(তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা)



তোমাকে পাওয়ার জন্য,হে স্বাধীনতা
                     শামসুর রাহমান
      তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা
      তোমাকে পাওয়ার জন্য
      আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
      আর কতবার দেখতে হবে খান্ডবদাহন?


      তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,
      সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
      সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর

      তুমি আসবে ব
লে,হে স্বাধীনতা,
      শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাংক এলো
      দানবের মতো চিৎকার করতে করতে
      তুমি আসবে ব
লে, হে স্বাধীনতা,
      ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো
রিকয়েললেস রাইফেল
      আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র

      তুমি আসবে ব
লে ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম
      তুমি আসবে ব
লে বিধ্বস্ত পাড়ায় প্রভুর বাস্তুভিটার
      ভগ্নস্তুপে দাঁড়িয়ে একটানা আর্তনাদ করলো একটা কুকুর

      তুমি আসবে ব
লে, হে স্বাধীনতা
      অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিলো পিতামাতার লাশের ওপর


      তোমাকে পাওয়ার জন্যে,হে স্বাধীনতা,তোমাকে পাওয়ার জন্য
      আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
      আর কতবার দেখতে হবে খান্ডবদাহন?
      স্বাধীনতা, তোমার জন্যে থুথুরে এক বুড়ো
      উদাস দাওয়ায় ব
সে আছে- তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্নের
      দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নড়চে চুল

      স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
      মোল্লাবাড়ির এক বিধবা দাঁড়িয়ে আছে
      নড়বড়ে খুটি ধ
রে দগ্ধ ঘরের
      স্বাধীনতা, তোমার জন্য
      হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে
     
সে আছে পথের ধারে
      তোমার জন্যে,
      সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক,
      কেষ্ট দাস, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লোকটা,
      মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি,
      গাজী গাজী ব
লে যে নৌকা চালায় উদ্দাম ঝড়ে
      রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস
      এখন পোকার দখলে
      আর রাইফেল কাঁধে বনে-জঙ্গলে ঘুরে-বেড়ানো
      সেই তেজী তরুণ যার পদভারে
      একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হ
তে চলেছে-
      সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা


      পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত জ্বলন্ত
      ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,
      নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
      এই বাংলায়
      তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা

 
            To Get You, O freedom
                                                - Shamsur Rahman

            To get you, O freedom
            To got you
            How long will there be Ganges of blood?
            How long will there be the burning of Khandava?

            For you will come, O freedom,
            Sakina Bibi was violeted
            Minimum of Haridashi was erased from the forhead
            For you will come, O freedom,
            Olive coloured tank came everywhere in the city
            Roaring like a demon
            For you will come, O freedom
            Hostel, slum were emptied. Recoilless rifles
            And machine-gun banged everywhere.
            For you will come, village after village were burned.
            For you will come, a dog cried standing
            On the remains of the master’s house.
            For you will come, O freedom
            Innocent child crawled over the dead parent’s bodies.

            To get you, O freedom, to get you
            How long will there be Ganges of blood?
            How long will there be the burning of Khandava?
            Freedom, for you an old man
            There on the porch is sitting with
            The dim light of evening in his eyes – flows his hair on the air
            Freedom, for you
            A widow of the Molla’s is standing
            Holding the burned pillar of the house.
            Freedom, for you
            A raw-boned orphan child with an empty bowl
            Sits she on the road corner.
            For you,
            Sagir Ali, that young farmer from Shahbajpur,
            Kesta Das, that very brave man from the fishermen’s,
            Motlob Miah, a skilled boatman of Meghna river,
            Yelling ‘Gaji Gaji’ who would sail in the mad thunder
            Rustom Shekh, rikshaw puller from Dhaka,
            Insects reigns in whose lunges now
            And that racy lass who sneaks in the jungles
            With a rifle over his shoulder
            On whose footstep a new world is about to begin
            Everyone’s restlessly waiting for you, O freedom.

            From one to another corner of the world
            With a reverberating fire of announcement,
            With a new flag, kettling every inch of lands
            In this Bengal, 
            O freedom, you have to come.