মাচু পিচুর চূড়া
-পাবলো নেরুদা
(বারো অধ্যায়)
আমার সাথে জন্ম নিতে উঠে এসো, আমার ভাই।
তোমার হতাশার বীজে বেড়ে ওঠা
রাজত্বের গভীর থেকে বাড়িয়ে দাও হাত।
তুমি ফিরবে না এইসব পাথরতল থেকে।
তুমি ফিরবে না অতল গভীর সমেয়ের ওপার থেকে।
ফিরবে না তোমার ঘসা কন্ঠস্বর।
ফিরবে না তোমার কোটর বিস্ফরিত চোখ।
পৃথিবীর গভীর থেকে তাকিয়ে দেখ আমাকে,
কৃষক, তাঁতি, বাকহীন রাখাল,
তদারকি লামার রক্ষক,
বিপদজনক ভারার রাজমিস্ত্রি,
আন্দিজ-অশ্রু মাখা জলের বাহক,
থেতলানো আঙ্গুলের স্বর্ণকার,
ফসলের মাঝে কম্পমান চাষী,
কর্দমাক্ত কুমার,
ফিরিয়ে আনো তোমার প্রাচীন গোর-দেওয়া দুঃখ
এই নতুন জীবনের পেয়ালায়।
আমাকে দেখাও তোমার রক্ত আর তোমার ক্ষত,
আমাকে বলঃ এখানে আমি সাজা পেয়েছি
যখন রত্ন-পাথর পাইনি বা ধরনী
জন্ম দেয়নি বেসুমার ফসলের কিংবা পাথরের;
চিনেয়ে দাও সেই পাথর যেখানে তুমি আঁছড়ে পড়েছ
আর সেই কাঠ যেখানে তোমাকে তারা বিধেছে ক্রুশে।
তোমার আদিম চকমকি পাথর ঘস
জ্বেলে দাও পুরোনো বাতি, ফাটল ধরাও
শতাব্দীপুরনো তোমার শরীরে রক্ত-আঁক দেওয়া চাবুকের দাগে।
আমি তোমার মৃত মুখের ভাষা হতে এসেছি।
জড় হও, সারা পৃথিবীর
সব ক্ষয়ে যাওয়া স্তব্ধ কন্ঠস্বর,
আর কথা কয়ে চলো এই দীর্ঘ রাতে
নোঙ্গর বাধা যেন আমি তোমার সাথে।
আমাকে বলে দাও সব, খুটি থেকে খুটিতে
স্তরে স্তরে, ধাপে ধাপে।
খাপে ভরা খঞ্জর শান দাও,
বিধিয়ে দাও আমার বুকে আর বাহুতে,
হলদে রং-জ্বলা নদীর মতন,
জাগুয়ার-সমাধি নদীর মতন,
আর আমাকে কাঁদতে দাও, ঘন্টাজুড়ে, দিনমান, সারাবছর,
অন্ধ সময় আর নক্ষত্রোপাশ-শতাব্দী ঘিরে।
আমাকে স্তব্ধতা দাও, জল দাও, আশা দাও।
সংগ্রাম দাও, লৌহ, আগ্নেয়গিরি।
চুম্বকের মত বেধে ধর আমার সাথে তোমার শরীর।
আমার শিরায় আর ওষ্ঠে জড় হও।
কথা বল আমার শব্দে, আমার রক্তে।
মূল কবিতাঃ Heights of Macchu Picchu
কবিঃ পাবলো নেরুদা, চিলির জাতীয় কবি। ১২ অংশের দীর্ঘ কবিতার ১২তম অংশটিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
-পাবলো নেরুদা
(বারো অধ্যায়)
![]() |
এই ধার গুলোতে চাষাবাদ করা হত |
আমার সাথে জন্ম নিতে উঠে এসো, আমার ভাই।
তোমার হতাশার বীজে বেড়ে ওঠা
রাজত্বের গভীর থেকে বাড়িয়ে দাও হাত।
তুমি ফিরবে না এইসব পাথরতল থেকে।
তুমি ফিরবে না অতল গভীর সমেয়ের ওপার থেকে।
ফিরবে না তোমার ঘসা কন্ঠস্বর।
ফিরবে না তোমার কোটর বিস্ফরিত চোখ।
পৃথিবীর গভীর থেকে তাকিয়ে দেখ আমাকে,
কৃষক, তাঁতি, বাকহীন রাখাল,
তদারকি লামার রক্ষক,
বিপদজনক ভারার রাজমিস্ত্রি,
আন্দিজ-অশ্রু মাখা জলের বাহক,
থেতলানো আঙ্গুলের স্বর্ণকার,
ফসলের মাঝে কম্পমান চাষী,
ফিরিয়ে আনো তোমার প্রাচীন গোর-দেওয়া দুঃখ
এই নতুন জীবনের পেয়ালায়।
আমাকে দেখাও তোমার রক্ত আর তোমার ক্ষত,
আমাকে বলঃ এখানে আমি সাজা পেয়েছি
যখন রত্ন-পাথর পাইনি বা ধরনী
![]() |
মাচু পিচুর পুরো অংশ |
চিনেয়ে দাও সেই পাথর যেখানে তুমি আঁছড়ে পড়েছ
আর সেই কাঠ যেখানে তোমাকে তারা বিধেছে ক্রুশে।
তোমার আদিম চকমকি পাথর ঘস
জ্বেলে দাও পুরোনো বাতি, ফাটল ধরাও
শতাব্দীপুরনো তোমার শরীরে রক্ত-আঁক দেওয়া চাবুকের দাগে।
আমি তোমার মৃত মুখের ভাষা হতে এসেছি।
জড় হও, সারা পৃথিবীর
সব ক্ষয়ে যাওয়া স্তব্ধ কন্ঠস্বর,
আর কথা কয়ে চলো এই দীর্ঘ রাতে
নোঙ্গর বাধা যেন আমি তোমার সাথে।
আমাকে বলে দাও সব, খুটি থেকে খুটিতে
স্তরে স্তরে, ধাপে ধাপে।
খাপে ভরা খঞ্জর শান দাও,
বিধিয়ে দাও আমার বুকে আর বাহুতে,
হলদে রং-জ্বলা নদীর মতন,
জাগুয়ার-সমাধি নদীর মতন,
আর আমাকে কাঁদতে দাও, ঘন্টাজুড়ে, দিনমান, সারাবছর,
অন্ধ সময় আর নক্ষত্রোপাশ-শতাব্দী ঘিরে।
![]() |
লামা |
আমাকে স্তব্ধতা দাও, জল দাও, আশা দাও।
সংগ্রাম দাও, লৌহ, আগ্নেয়গিরি।
চুম্বকের মত বেধে ধর আমার সাথে তোমার শরীর।
আমার শিরায় আর ওষ্ঠে জড় হও।
কথা বল আমার শব্দে, আমার রক্তে।
মূল কবিতাঃ Heights of Macchu Picchu
কবিঃ পাবলো নেরুদা, চিলির জাতীয় কবি। ১২ অংশের দীর্ঘ কবিতার ১২তম অংশটিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment